কারক ও বিভক্তি চেনার সহজ উপায় বা টেকনিক
সমুহ
বাংলা ব্যাকরণ অংশ হতে
চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে। কারক ও বিভক্তি অংশ হতে অধিকাংশ পরীক্ষায় ১-২ টি প্রশ্ন
আসে। কারক ও বিভক্তি চেনার সহজ উপায় জানা থাকলে এই অংশ হতে উত্তর করতে পারবেন । কারক
ও বিভক্তি কাকে বলে এই অংশ হতে জানতে পারবেন ।
কারক ও বিভক্তি চেনার
সহজ উপায়:
প্রশ্ন: কারক কাকে বলা
হয়?
কারক শব্দটির অর্থ যা
ক্রিয়া সম্পাদন কর সংঙ্গ নাম পদের যে সম্পর্ক, তাকে কারক বলে। কারক ছয় প্রকার। যথা-
কর্তৃকারক, কর্মকারক, করণ কারক, সম্প্রদান কারক, অপাদান কারক এবং অধিকরণ কারক।
প্রশ্ন: বিভক্তি কাকে
বলা হয়?
বাক্যস্থিত একটি শব্দের
সঙ্গে অন্য শব্দের অন্বয় সাধনের জন্য শব্দের সঙ্গে যে সকল বর্ণ যুক্ত হয় তাদের বিভক্তি
বলে। যেমন- শিশুটি ছাদে বসে আছে। বাক্যটিতে ছাদে (ছাদ + এ বিভক্তি)।
বিভক্তি প্রধানত দুই
প্রকার: যথা- ১. নাম বা শব্দ বিভক্তি ২. ক্রিয়া বিভক্তি
বাংলা শব্দ বিভক্তি সাত
প্রকার:
বিভক্তি — একবচন
প্রথমা — ০
দ্বিতীয়া — কে, রে
তৃতীয়া — দ্বারা, দিয়
(দিয়ে), কর্তৃক
চতুর্থী — কে, রে
৫মী — হইতে, থেক চেয়ে,
হতে
ষষ্ঠী — র, এর
সপ্তমী — তে, এ, য়
কারক নির্ণয়ের/চেনার
সহজ ও শর্টকাট পদ্ধতি:
ক্রিয়াকে প্রশ্ন যে
প্রশ্নগুলেআ করবেন: কে, কারা?, কী, কাকে?, কী দিয়ে?, কাকে দান করা হল?, কি হতে বের
হল?, কোথায়, কখন, কী বিষয়ে? কোনটা কোন কারক সহজেই চিনবেন যে কৌশলে তা নিচে দেওয়া
হল:-
কর্তৃকারক চেনার উপায়:
বাক্যস্থিত যে বিশেষ্য
বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া সম্পন্ন করে, তাকে ক্রিয়ার কর্তা বা কর্তৃকারক বলে। ক্রিয়াকে
‘কে/ কারা’ দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, সেটিই কর্তৃকারক। কে? / কীসে + ক্রিয়া
= কর্তৃকারক । (কর্মবাচ্য ও ভাববাচ্যের বাক্যে এই নিয়ম খাটবে না। সেক্ষেত্রে একটু সাবধানতা
অবলম্বন করতে হবে।)
উদাহরণ- ঘোড়ায় ( কে?)
গাড়ি টানে। গরু (কে খায়) ঘাস খায়। পাখি (কীসে?) সব, করে রব।
কর্মকারক চেনার উপায়:
যাকে অবলম্বন করে কর্তা
ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে ক্রিয়ার কর্ম বা কর্মকারক বলে। ক্রিয়াকে ‘কী/ কাকে’ দিয়ে
প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, সেটিই কর্মকারক। কী? / কাকে? + ক্রিয়া = কর্মকারক। কর্তার কাজ বোঝাবে।
. যেমন : অর্থ অনর্থ (কী?) ঘটায়? ; ডাক্তারকে
( কাকে?) ডাক।
করণকারক চেনার উপায়:
করণ শব্দের অর্থ যন্ত্র,
সহায়ক বা উপায়। যে উপাদান বা উপায়ে ক্রিয়া সম্পাদন করা হয়, তাকে করণ কারক বলে।
ক্রিয়াকে ‘কী দিয়ে/ কী উপায়ে’ দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তাই করণ
কারক।
(কী / কীসের ) দ্বারা?
+ ক্রিয়া = করণ কারক। যন্ত্র/সহায়/উপায় বা মাধ্যম বোঝাবে। যেমন : ছেলেরা ফুটবল ( কী দ্বারা?) খেলছে। টাকায় ( কীসের দ্বারা?)
বাঘেরদুধ মেলে।পিয়াল কলম দিয়ে লিখছে। (কী দিয়ে লেখে? কলম দিয়ে):করণ কারকে তৃতীয়া
বিভক্তি
সম্প্রদান কারক চেনার
উপায়:
যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে
কিছু দেয়া হয়, তাকে সম্প্রদান কারক বলে। ‘কাকে দান করা হল’ প্রশ্নের উত্তরই হলো সম্প্রদান
কারক। কাকে দান করা হল? = সম্প্রদান কারক। স্বত্ব ত্যাগ বোঝাবে।
যেমন :শীতার্তকে ( কাকে
দান করা হল? ) বস্ত্র দাও।, সৎপাত্রে ( কীসে
দান?) কন্যা দান করিও।, ভিখারিকে ভিক্ষা দাও।
(কাকে দান করা হল? ভিখারিকে।):
সম্প্রদান কারকে চতুর্থী বিভক্তি
অপাদান কারক চেনার উপায়:
যা থেকে কোন কিছু গৃহীত,
বিচ্যুত, জাত, বিরত, আরম্ভ, দূরীভূত, রক্ষিত, ভীত হয়, তাকে অপাদান কারক বলে। অর্থাৎ,
অপাদান কারক থেকে কোন কিছু বের হওয়া বোঝায়।
‘কি হতে বের হল’ প্রশ্নের উত্তরই অপাদান কারক।
( কী/কীসের /কোথা) থেকে?
+ ক্রিয়া = অপদান কারক। গৃহীত, উৎপন্ন, চলিত, পতিত ইত্যাদি বোঝাবে। যেমন :স্কুল (
কীসের থেকে?) পালিয়ে পণ্ডিত হওয়া যায়না। সরিষা থেকে ( কী থেকে?) তেল হয়। গাছ থেকে
পাতা পড়ে। (কি হতে বের হল/ পড়ল? গাছ থেকে): অপাদান কারকে পঞ্চমী বিভক্তি
অপাদান কারক চেনার উপায়:
প্রচলিত বাংলা ব্যাকরণের
কারক-এর একটি শ্রেণি। বাংলা ব্যাকরণে অপাদান কারক এসেছে পাণিনি’র অষ্টাধ্যায়ী অনুসরণে।
কখন? /কোথায়? / কীভাবে?/ বিষয়ে? + ক্রিয়া = অধিকরণ কারক। স্থান, কাল,বিষয়, ভাব
বোঝাবে।
যেমন : ভোরবেলা ( কখন?
) সূর্য উঠে। সে বাড়ী ( কোথায়? ) নাই?
সম্বন্ধ পদ ও অপাদানের
সম্পর্ক:
অনেক ক্ষেত্রেই অনুসর্গের
পূর্বপদের সাথে একটি সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। এ ক্ষেত্রে পূর্ব পদে ষষ্ঠী বিভক্তি যুক্ত
হলেও কারক বিভক্তি হিসাবে এই ষষ্ঠী বিভক্তি মূল্য পায় না। এক্ষেত্রে ষষ্ঠী বিভক্তি
কতকগুলো বিশেষ রীতি অনুসরণ করে।
0 coment rios: